আজ ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

এক জমি দুই লোকের কাছে বিক্রি সালিশে গিয়ে আসামী হলেন চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক

বেলাবতে একই জমি দুইজনের কাছে বিক্রি করা নিয়ে দ্বন্ধের অবসানে সালিশ করতে গিয়ে চাঁদাবাজিসহ একাধিক মামলার আসামী হয়েছেন কাউছার কাজল নামে এক ইউপি চেয়ারম্যান। তিনি উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও কাঙ্গালীয়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধের সংগঠক সার্জেন্ট আব্দুল কাদিরের ছেলে।

ঘটনাটি ঘটেছে নারায়নপুর ইউনিয়নের কাঙ্গালীয়া গ্রামে। জমি সংক্রান্ত এ ঘটনায় উভয় পক্ষই একাধিক মামলা ও বিভিন্ন দপ্তরে একাধিক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

মামলার এক পক্ষের অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যান কাউছার কাজল অন্যায়ভাবে একটি পক্ষের পক্ষপাতিত্ব করায় ও চাঁদা চাওয়ায় তাকে মামলার আসামী করা হয়েছে। তবে উক্ত ইউপি চেয়ারম্যান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন চাঁদা দাবীর কথাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। সালিশে সত্যের পক্ষে রায় যাওয়ায়ই তারা আমাকে মামলার আসামী করেছেন ।

জানা গেছে,উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের কাঙ্গালীয়া গ্রামের জুম্মুন মিয়ার ছেলে শহীদুল হক তার ১০ শতাংশের একটি ফসলী জমি ১৯৯৩ সালে বিক্রি করে তারই ভাই ইউনুছ মিয়ার কাছে। একই জমি আবার চলতি বছরের অক্টোবর মাসে বিক্রি করে মামুন মিয়া নামে আরেক ব্যক্তির কাছে। তবে জমি দাতা শহিদুলের হকের দাবি তিনি তার ভাই ইউনুস মিয়ার কাছে জমি বিক্রি করেননি। এ নিয়ে ইউনুছ মিয়া ও শহীদুল হকের মধ্যে দ্বন্ধ বাড়তে থাকে। এরই মধ্যে চলতি মাসের ১২ তারিখে উল্লেখিত জমিতে লাগানো সীম ক্ষেত কেটে ফেলাসহ জোড়পূর্বক ঘর নির্মান ও মারধরের অভিযোগ এনে শহীদুল হকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে বেলাব থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন প্রথম জমি ক্রয়কৃত ব্যক্তি ইউনুছ মিয়া। এসব ঘটনা নিরসনে গ্রামে গত অক্টোবর মাসে বসে সালিশ। সালিশে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কাউছার কাজলসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিল।

এদিকে এ ঘটনায় মাসুদ মিয়া নামে এক ভাড়াটিয়া চেয়ারম্যান কাউসার কাজলকে প্রধান করে ৫জনকে আসামী করে ১৩ নভেম্বর নরসিংদী আদালতে একটি চাঁদাবাজির মামলা ও ১৬ নভেম্বর শহিদুল বাদী হয়ে নরসিংদী আদালতে উক্ত চেয়ারম্যানকে প্রধান করে ৬ জনের নামে ৭ ধারার আরেকটি মামলা করেন।

ইউনুস মিয়া বলেন,আমি ১৯৯৩ সালে আমার ভাই শহিদুলের কাছ থেকে ১০ শতাংশ জমি খারিজ করে ক্রয় করি। কিন্তু জমি দলিলের মূল কপি হারিয়ে ফেলি। বর্তমানে আমার কাছে দলিলের নকল আছে। বর্তমানে শহিদুল জমি বিক্রির কথা অস্বীকার করছে। আমি এর বিচার চাই।

দ্বিতীয়বার জমি ক্রয় করা ব্যক্তি মামুন মিয়া বলেন,শহিদুলের কাছ থেকে আমি চলতি বছরের অক্টোবর মাসে এই জমি ক্রয় করেছি। ইউনুস মিয়ার কাছে যে দলিল আছে সে দলিল জাল দলিল। তিনি দলিলের মুল কপি দেখাতে পারেনা।

ভাড়াটিয়া মাসুদ মিয়া বলেন,আমি মামুন মিয়ার কাছ থেকে উক্ত জমি ভাড়া নিয়ে একটি ঘর তৈরী করে পবিত্র কোরআন শরিফের রিআল তৈরীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দেই। কিন্তু অত্র ইউনিয়নের চেয়ারম্যান তার লোকবল নিয়ে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এসে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। আমি এ কারনে উনাকে প্রধান আসামী করে আদালতে চাঁদাবাজির মামলা করেছি।

নারায়নপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাউসার কাজল বলেন,একই জমি শহিদুল দুজনের কাছে বিক্রি করেছেন। প্রথমে বিক্রি করেছেন ইউনুস মিয়ার কাছে। ২৯ বছর পর মামুন মিয়ার কাছে পূণরায় জমিটি বিক্রি করে। এ নিয়ে দ্বন্ধের অবসান কল্পে সালিস বসে। সালিসে তারা মনে করেছে আমি ইউনুস মিয়ার পক্ষে পক্ষপাতিত্ব করছি। এ ধারনা থেকেই তারা আমাকে মামলার আসামী করেছে।

 

এ ক্যাটাগরির আরো নিউজ...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ ক্যাটাগরির আরো নিউজ...