শেখ আব্দুল জলিল
আগুন গরম এক কাপ চা পান করেই লজ্জামাখা আনন্দে বাড়ির পাশের পুকুরে ঝাঁপিয়ে পড়ে কিশোরী। পানির সাথে গভীর প্রেম তার। সারাদিনই সাঁতার কাটে জলে। সাঁতার কাটাই যেন নেশা তার।
শুধু সাঁতার কেন পানিতে ভাসতেও পারে সারাক্ষন। কেউ যদি চ্যালেঞ্জ করে তাহলে সকাল থেকে সারাদিন পানিতে ভাসতে পারে লাজুক মেয়েটি।
বিশ্বাস হচ্ছেনা? এমনই ব্যতিক্রমী কাজকেই সাধন করেছে কিশোরী তুহিন। বলছিলাম লক্ষ্মীপুর জেলার বিজয়নগর গ্রামের কিশোরী তুহিনের কথা। পুরো নাম তাহমিনা আক্তার তুহিন। আব্দুল কাদের আর নুরুন নাহারের আদরের দুলালী এই তুহিনকে নিয়ে আমাদের আজকের প্রতিবেদন।
তাহমিনা আক্তার তুহিনের শৈশব কেটেছে গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলার উত্তর বিজয়নগর গ্রামে। ছোটবেলা থেকে অত্যান্ত লাজুক হলেও তুহিন ছিল যথেষ্ঠ ডানপিটে।
পানিতে মাছেরা কিভাবে সাঁতার কাটে!পদ্ম ফুলেরা কিভাবে জলে ভাসে। এমন উদ্ভুট ভাবনা তুহিনের মনে আনাগোনা করতো সবসময়। মাছের মত সাঁতার কাটতে ইচ্ছে করতো তার। জলের ছলাৎ ছলাৎ শব্দে খেলা করতে ইচ্ছে করতো তার।
পদ্ম ফুলের মত পানিতে ভাসতে ভাসতে ইচ্ছে হত তুহিনের।
বেশ!! ইচ্ছে থেকেই জন্ম নেয় স্বপ্ন পূরণের আশা। গ্রামের পুকুরে সাঁতার কাটা। সাঁতার কাটতে কাটতে পানিতে ভেসে থাকাটাও রপ্ত করে তুহিন। প্রথম প্রথম কিছুটা কম সময় হলেও এখন বেশ সময় ধরেই পানিতে ভেসে থাকতে পারে তুহিন। যদি সে ইচ্ছা করে সারাদিনই নাকি ভাসতে পারে পানিতে। এতেই নাকি সে তৃপ্তি পায়।
একদিন দেখা হয় তুহিনের সাথে। বাড়ির পাশের পুকুরে সাঁতার কাটা আর পানিতে ভাসছিল সে। জীবন্ত মানুষ পানিতে ভাসতে পারে তা প্রথমে বিশ্বাসই হচ্ছিলনা। অবশেষে ঘোর কাটে। সত্যি পানিতে ভাসছে তুহিন। দীর্ঘসময় দীর্ঘক্ষন ধরে।
দূর থেকে পানিতে ভাসমান তুহিনের ভেজা চুল,ভাসমান শরীর যেন ঠিক জলপরী। জলে ভাসতে ভাসতে তুহিন যেন ভেজা গাঢ় কাজল চোখে দেখে নীল আকাশ। দেখে তার গহীন চোখের আবেদনে যেন সাড়া দেয় দিগন্ত,সাড়া দেয় গাংচিল।
তুহিন যখন পানিতে ভাসে ঘন্টার পর ঘন্টা তখন পুকুর পাড়ে ভীড় করে উৎসুখ জনতা। আবাল বৃদ্ধ বণিতা পুকুর পাড়ে দাঁড়িয়ে দেখে এক জলপরীর জলখেলা।
কথা হয় তুহিনের সাথে,নিজ থেকেই নাকি পানিতে ভাসতে শিখেছে সে। তুহিন জানায়,সাঁতার কাটতে কাটতে যখন ক্লান্তি এসে ভর করে দেহে তখনই পানিতে শুয়ে পড়ি। পানিতে ভাসতে থাকি। তখন খুব শান্তি লাগে রিল্যাক্স লাগে। কোন আওয়াজ কানে আসেনা। নীরব নিস্তব্ধতায় চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকি জলে, কথা বলি জলের সাথে,জলকেই আপন ভেবে।
Leave a Reply