আজ ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

প্রতিবন্ধী সেজে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেয়ার অভিযোগ এক নারীর বিরুদ্ধে

 

নিজস্ব প্রতিবেদক

নরসিংদীর রায়পুরায় প্রতিবন্ধী না হয়েও করেছেন প্রতিবন্ধী কার্ড এবং অংশ গ্রহন করেছেন পরিবার পরিকল্পনা দপ্তরের আওতায় একটি সরকারি নিয়োগ পরীক্ষায়।

সম্প্রতি রায়পুরা উপজেলার চড় আড়ালিয়া ইউনিয়নে পরিবার পরিকল্পনায় সহকারি পদে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেয়ার এমন অভিযোগ উঠে মর্জিনা আক্তার নামে এক নারীর বিরুদ্ধে।

মর্জিনা আক্তার চড় আড়ালিয়া ইউনিয়নের বাঘাইকান্দি গ্রামের ইলিয়াস মিয়ার মেয়ে ও বাঘাইকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবির এর স্ত্রীর।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মর্জিনা আক্তার টাকার বিনিময়ে এক চিকিৎসকের কাছ থেকে শ্রবন প্রতিবন্ধীর ভূয়া রিপোর্ট তৈরি করে স্থানীয় ইউপি সদস‍্যে এর মাধ্যমে একটি প্রতিবন্ধী কার্ড করেন।

কিন্তু সত্যিকার অর্থে সে কোনো প্রতিবন্ধী নয়, একজন সুস্থ্য সবল মানুষ।

উক্ত প্রতিবন্ধী কার্ডকে কাজে লাগিয়ে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া ইউনিয়ন পর্যায়ে পরিবার পরিকল্পনায় সহকারি পদে নিয়োগ পরীক্ষায় মর্জিনা আক্তার অংশ গ্রহন করে।

বিষয়টি নিয়ে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ইভা আক্তার নামে আরেক নারী জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মর্জিনা আক্তার সম্পূর্ণভাবে সুস্থ আছেন। উনার সরকারি চাকরী করার বয়স সীমাও শেষ হয়ে গেছে। এর জন্য উনি প্রতিবন্ধী কার্ড সংগ্রহ করেন। এছাড়াও লিখিত অভিযোগে, মর্জিনা আক্তার সঠিক প্রতিবন্ধী কিনা সে বিষয়ে পুনরায় ডাক্তারের মাধ্যমে যাচাই করণের দাবি জানানো হয়।

ইভা আক্তারের এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় এক তরুণ সাংবাদিক বিষয়টি জানতে রায়পুরা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা কার্যালয়ে গেলে এ বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলে তাকে কোন তথ্য দেওয়া হবে না বলে সেখান থেকে জানানো হয়।

এ বিষয়ে মর্জিনা আক্তারের স্বামীর বাঘাইকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক হুমায়ুন কবির’র সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন,ডাক্তারি পরীক্ষা নিরীক্ষা ও যাচাই-বাছাই’র পর আমার স্ত্রী প্রতিবন্ধী কার্ড প্রাপ্ত হয়। এখানে কোন মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া হয়নি। চ্যালেঞ্জের মুখে তা পূনরায় যাচাই বাছাই হলেও আমি ১০০ ভাগ নিশ্চিত করে বলতে পারি তার প্রতিবন্ধী বিষয়টি মিথ্যা প্রমাণিত হবে না।

চর আড়ালিয়া ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হায়দার আলী বলেন, এ ব্যাপারে কোন একজন আমাকে ফোন দিয়ে জানতে চাইলে আমি তার উত্তরে বলি “আমার জানামতে হুমায়ুন মাস্টারের স্ত্রী কানে শুনতে পায় তবে তিনি প্রতিবন্ধী কিনা তা আমি জানিনা।”

রায়পুরা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা খলিলুর রহমান খলিল বলেন, “কেউ প্রতিবন্ধী কিনা তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সার্টিফিকেট দেয় ডাক্তার। আমরা ওই সার্টিফিকেটের ভিত্তিতে প্রতিবন্ধী কার্ড দিয়ে থাকি এর বাইরে নয়।”

নরসিংদী জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক অরবিন্দ দত্ত বলেন যেহেতু ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষায় এবং সিভিল সার্জন এর উপস্থিতিতে মর্জিনাকে প্রতিবন্ধী বাছাই করা হয়েছে সেক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ করার কোন সুযোগ নেই।

নরসিংদীর সিভিল সার্জন ডাঃ নুরুল ইসলাম জানান, আমার জানামতে মর্জিনা আক্তার একজন শ্রবণপ্রতিবন্ধী। তবে এমন কোন কিছুতেই যদি প্রমাণিত হয় যে সে শ্রবণ প্রতিবন্ধী নয়, প্রতিবন্ধী সাজার নাটক করে ডাক্তারের মাধ্যমে ভূয়া রিপোর্ট তৈরি করিয়ে প্রতিবন্ধী কার্ড নিয়ে থাকে তাহলে তার ও ডাক্তারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ক্যাটাগরির আরো নিউজ...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ ক্যাটাগরির আরো নিউজ...