লংগদু (রাঙামাটি) প্রতিনিধিঃ
সোনারগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনের ছাদ খসে খসে পড়ছে। রাঙামাটির লংগদু উপজেলার গুলশাখালী ইউপির এই বিদ্যালয়টির অবস্থা খুবই ভয়াবহ। অবস্থা দেখে ভয়ে বিদ্যালয়ে যায় না অধিকাংশ শিশু শিক্ষার্থীরা। আতঙ্কে আছেন শিক্ষক-অভিভাবকরাও। কেউ কেউ ছেলেমেয়েদের সরিয়ে নিয়ে ভর্তি করছেন অন্য কোথাও। যারা সেটা পারছেন না, তারা শিশুদের বিদ্যালয়ে পাঠাতে চান না আতঙ্কের কারণে।
গুলশাখালীর উত্তর প্রান্তের এই বিদ্যালয়টির একটিই ভবন। ১৯৯২ সালে নির্মিত ভবনে রয়েছে চারটি কক্ষ। চারটি রুমের মধ্যে একটি রুম ইতোমধ্যে এতটাই ভয়াবহ হয়ে উঠেছে যে শিক্ষক-স্কুল পরিচালনা কমিটি নিজেরাই সেটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দিয়েছেন। সেখানে এখন আর কেউ প্রবেশ করে না।
বাকি তিনটি রুমের মধ্যে একটিতে অফিস, আর দুটিতে ক্লাস নেয়া হচ্ছে শিশুদের। পর্যাপ্ত রুম না থাকায় একই সাথে ২-৩ ক্লাসের শিশুদের বসিয়েই ক্লাস নিতে হয়। তাতে পড়ালেখায় শিশুদের মনোযোগ দেয়ার কোনো সুযোগ থাকে না।
একদিকে থাকে যেকোনো সময় ছাদের কোনো অংশ মাথার উপর পড়ার ভয়, অন্যদিকে ভিন্ন ক্লাসের শিশুদের হৈচৈয়ের কারণে সেটাকে আর শিক্ষার পরিবেশ বলা যায় না।
এই রুমগুলোর অবস্থাও এমন যে, কয়েকদিন আগে ক্লাস নেওয়া অবস্থায় এক শিক্ষকের মাথার উপরেই ছাদের কিছু অংশ ভেঙ্গে পড়েছিল। কিন্তু ভেঙ্গে পড়া ইট-সিমেন্টের অংশ আকারে ছোট ছোট হওয়াতে বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যান তিনি। ছাদ এবং বিমের বিভিন্ন অংশ ভেঙ্গে চেয়ার-টেবিলের উপর ছড়িয়ে পড়ে আছে। দেওয়ালের বিভিন্ন স্থানেও বড় বড় ফাটল ধরেছে। যেকোনো সময় বড় আকারে দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
স্কুলটির পাশে বাড়ি মো. বাচ্চু মিয়ার। তার দুটি সন্তান এই স্কুলে পড়ে। ছোট বাচ্চাটি শিশু শ্রেণিতে, বড়টি পড়ে চতুর্থ শ্রেণিতে। ছাদের পলস্তেরা খসে মাথার উপর পড়তে দেখে ছোট বাচ্চাটি ভয়ে আর স্কুলে যাচ্ছে না। বড়টাকেও আতঙ্কের কারণে পাঠাতে মন চায় না বলে জানান তিনি।
আরেক অভিভাবক মো. খোকন মিয়ারও একই কথা। তার এক সন্তান স্কুলে পড়ে। কিন্তু স্কুল ভবনের অবস্থা দেখে বাচ্চাটিকে স্কুলে পাঠাতে চান না তিনিও।
স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেন গত ২১ মার্চ ২৩ যোগদান করেছেন। ভবনের অবস্থা দেখে আতঙ্কে আছেন তিনিও। এর মধ্যেই স্কুল পরিচালনা কমিটি নিয়ে মিটিং করেছেন করণীয় নির্ধারণের জন্য।
স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. জয়নাল আবেদীন বাবুল জানান, স্কুল ভবনের অবস্থা দেখে ভয়ে উনার বাচ্চাটিও এখন আর স্কুলে যাচ্ছে না। তিন মাস আগে মিটিং করে একটি রুম বন্ধ করা হয়েছে, যাতে দুর্ঘটনা থেকে বাচ্চাদের বাঁচানো যায়। এরপর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর নতুন ভবন নির্মাণের জন্য একটি আবেদন করেছেন।
এ বিষয়ে শিক্ষা অফিসার এম.কে ইমাম উদ্দিন জানান, বিষয়টি আমি অবগত আছি। উপজেলার এমন চারটি বিদ্যালয়ের ভবন ঝুঁকিপূর্ণ, নতুন ভবনের জন্য কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকিব ওসমান বলেন, বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের জন্য স্কুল কর্তৃপক্ষ লিখিত আবেদন করেছে। আশা করি দ্রুত নতুন ভবনের ব্যবস্থা করা হবে।
সম্পাদকঃ শেখ আব্দুল জলিল, প্রধান সম্পাদকঃ শেখ শহীদ কায়সার, ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ উম্মে দিল আফসানা
সহ সম্পাদকঃ জান্নাতুল ফেরদাউস, বার্তা সম্পাদকঃ মোঃ আশিকুর রহমান সৈকত।
Office: Holding #535/1/A, Flat No:4B. South Monipur, Mirpur -1216 Dhaka, Bangladesh.
E-mail: narsingdipost@gmail.com Editor: 01736065708
Copyright © 2024 Narsingdi Post. All rights reserved.