সাইফুর নিশাদ
মনোহরদী প্রতিনিধি
জরাজীর্ণ শরীলে বয়সের ভারে অনেকটা নুয়ে পড়েছে বৃদ্ধ স্বামী-স্ত্রী। অভাব অনটন আর ক্ষুধার যন্ত্রনা তাদের নিত্যদিনের সঙ্গী ।
একবার খেলে আরেক বেলার খাবার কপালে জুটবে কিনা, তা নিয়ে দুঃচিন্তায় থাকতে হয়।
অভাবের চাকায় নিত্যদিন পৃষ্ঠ হলেও ভিক্ষার হাত না পেতে বেছে নিয়েছেন জীবন সংগ্রাম। এমনই অভাবী সংগ্রামী স্বামী-স্ত্রীর খুঁজ মিলেছে নরসিংদী জেলার মনোহরদী উপজেলার উপজেলার শেষ প্রান্তে চরমান্দালীয়া ইউনিয়নের মাস্টারবাড়ী গ্রামের বেরিবাঁধ সংলগ্ন এলাকায়। এরা হলেন মোঃ শামসু মিয়া(৯০) ও জহুরা খাতুন (৭০) দুই বৃদ্ধা।
জানা যায়,শুরুতে সামান্য ভিটে থাকলেও ত্রিশ বছর আগে নদী ভাঙ্গনে সব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েন।যাদের নিজেদের থাকার মত একটি ভাল ঘর নেই, বৃদ্ধা স্ত্রীকে নিয়ে জরাজীর্ণ একটি টিনের ছাপড়ায় খেয়ে না খেয়ে দিন কাটছে তাদের। সংসারে লাগামহীন নানা বোঝা টানতে টানতে এখন ক্লান্ত, সময়ের পরিক্রমায় হয়ে পড়েন অক্ষম, শক্তিহীন এই দম্পতি।
সেই দিনের তরতাজা জীবন দুটি আজ বয়সের ভারে একেবারে নুয়ে পড়েছে। তাদেের নেই থাকার মত একটি ভাল ঘর। মানবেতর জীবন কাটছে তাদের। বাস্তভিটা যা ছিলো তাও শেষ নদীভাঙ্গনে। এক কথায় ভালো নেই এই বৃদ্ধ দম্পতি।
এরপর থেকে কখনও ভাসমান জীবন আবার অন্যের জমিতে ঝোপড়ি ঘর বেধে থাকছেন ভূমিহীন দুই বৃদ্ধা স্বামী-স্ত্রী। অন্যের জায়গায় বাঁশ বেত দিয়ে বেধেছেন ঝোপড়ি দোকান। পুঁজিমাত্র তাদের ১০০ টাকা। অবিশাস্য হলেও এই পুঁজি দিয়ে শুরু থেকে দোকান পরিচালনা করছেন তারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কটিয়াদী-মনোহরদী চরমান্দালিয়া ব্রীজ সংলগ্ন চার রাস্তার মোড়ে একটি ঝোপড়ি দোকান। এতে বসে আছেন দুই বৃদ্ধা স্বামী-স্ত্রী। দোকানে দেখা যায়, সামান্য কিছু খাদ্যদ্রব্য। এর সর্বোচ্চ মূল্য ১০০-১৫০ টাকা হতে পারে।এ সময় কথা হয় পাশের কয়েকজন এলাকাবাসীর সঙ্গে, তাদের মধ্যে চরমান্দালিয়া গ্রামের মোঃ জয়নাল আবেদীন, আকাশ আলীসহ বেশ কয়েকজন বলেন, ‘বৃদ্ধা শামসু তার স্ত্রীকে নিয়ে খুবই অভাব অনটনে তাদের বাচঁতে হচ্ছে। তাদের কোন থাকার মত নিজস্ব জায়গা জমি নেই। কর্মহীন এক ছেলে থাকলেও পিতা মাতার দেখাশোনা করেনা। তদের খাদ্যদ্রব্যসহ সংসার চালানোর মত সহায়তা করার দাবি জানাচ্ছি আমরা এলাকাবাসী।
বৃদ্ধা শামসু বলেন, ‘একবেলা খাবার কপালে জুটলেও আরেক বেলার খাবার জুটেনা। নিজের কাছে দুইশত টাকা শেষ সম্বল ছিল, সেই টাকা দিয়ে দোকানে কিছু মালামাল তুলেছিলাম। এতে যে টাকা বিক্রি হয় তা দিয়ে একবেলা খাবার হয়না। কারো কাছে হাত না পেতে আমরা স্বামী-স্ত্রী বেঁচে থাকার জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি।
বৃদ্ধের স্ত্রী জহুরা খাতুন বলেন, ‘রোজার মাঝেও অভাবে না খেয়ে রোজা থাকতে হয়েছে। অনেকবার আলু সিদ্ধ করে ইফতার ও সেহরী করতে হয়েছে। সামনে ঈদ আসলেও আমাদের মনে কোন আনন্দ নেই। কেউ যদি আমাদের থাকার মত জায়গা ও সংসার চালানোর মত যেকোন প্রকার ব্যবস্থা করে দেয় তাহলে আমরা উপকৃত হবো।
সম্পাদকঃ শেখ আব্দুল জলিল, প্রধান সম্পাদকঃ শেখ শহীদ কায়সার, ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ উম্মে দিল আফসানা
সহ সম্পাদকঃ জান্নাতুল ফেরদাউস, বার্তা সম্পাদকঃ মোঃ আশিকুর রহমান সৈকত।
Office: Holding #535/1/A, Flat No:4B. South Monipur, Mirpur -1216 Dhaka, Bangladesh.
E-mail: narsingdipost@gmail.com Editor: 01736065708
Copyright © 2024 Narsingdi Post. All rights reserved.