হারুনুর রশিদ :
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মো. শহিদুল ইসলাম (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ কৃষক মসজিদ নির্মাণে তহবিল সংগ্রহে সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহন করন। সাঁতার প্রতিযোগিতার আয়োজন করেন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো আল আমিন ও স্থানীয়রা।
মেঘনা-আড়িয়াল খাঁ নদীতে একটানা সাড়ে ২২ কিলোমিটার সাঁতারের রেকর্ড করেছেন। এতে তিনি সময় নিয়েছেন ৫ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট। তিনি রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের দঁড়ি বালুয়াকান্দি গ্রামের হাজী দানিছ আলীর ছেলে।
আজ শনিবার সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে উপজেলার আড়িয়াল খাঁ নদীর আদিয়াবাদ সরকারি কলেজ ঘাট থেকে সাঁতার কাটা শুরু করেন শহিদুল ইসলাম। মেঘনা নদী দিয়ে বেলা ২ টা ২০ মিনিটে নরসিংদী সদর উপজেলার নাগরিয়াকান্দি ব্রিজ সংলগ্ন ঘাটে এসে পৌঁছান। এই দুই ঘাটের দূরত্ব সাড়ে ২২ কিলোমিটার সাঁতরে পার হতে তাঁর মোট সময় লেগেছে ৫ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট। সাঁতার প্রতিযোগিতার খবর শোনে সকাল থেকে সাঁতার উপভোগ করতে বিভিন্ন এলাকা থেকে বহু মানুষ এসে উপভোগ করেন। তাঁকে একনজর দেখতে ছোট-বড় নৌকা, স্পিডবোট ও নদী পারে কয়েক হাজার উৎসুক জনতার পুরো সময় নদী পাড়ে ভিড় জমান। মানুষের ভিড়ে নদীর তীরে পা ফেলার জায়গা ছিল না। অত্যন্ত আনন্দমুখর পরিবেশে এ সাঁতার সম্পন্ন হয়। স্থানীয় সেচ্ছাসেবীরা এ কাজে উৎসাহ দিতে অনেকেই তার সাথে সাঁতারে নেমে পরেন।
সাঁতার দেখতে আসা অনেকেই ছোট বড় নৌকা নিয়ে শহিদুল ইসলামের সাঁতারের সঙ্গে সঙ্গে সাহস দিতে আগোতে থাকেন। সাঁতরে নাগরিয়াকান্দি এলাকায় তীরে ওঠার পর দর্শনার্থীদের ভালোবাসায় সিক্ত হন শহিদুল ইসলাম। এ সময় ঘাটে হাজার হাজার মানুষ তাকে অভিবাদন জানায় এবং ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানান। পাশাপাশি অনেকে মসজিদ নির্মাণের ব্যয়ের অর্থ সহযোগিতার আশ্বাস দেয়। এম আর রহমান, এস এম শরীফ, আ. করিমসহ কয়েকজন জানান, শহিদুল ইসলামের মেঘনা নদীতে সাঁতারের কথা শুনেই তাঁরা ছুটে এসেছেন। এর আগেও তাঁর সাঁতারে সবাই আনন্দ উদযাপন করে ছিল। এই বয়সে এসেও মসজিদ নির্মাণের তহবিল সংগ্রহে নিজেকে বিলিয়ে দেয়ায় অন্য নজির গড়েছে।
এস এম শরীফ বলেন, 'আমরা চাই তাঁর এমন কৃতিত্বের জন্য সারা বিশ্বের মানুষ তাঁকে মনে রাখবে। এমন বয়সে তাঁর এই সাফল্যের রায়পুরাবাসী গর্বিত।'
প্রসঙ্গত, এর আগেও উপজেলার পল্লি চিকিৎসক বকুল ৪০ কিলোমিটার সাঁতরে রেকর্ড করেন। তার পরে দ্বিতীয় ব্যক্তি হিসেবে দুই দুইবার রেকর্ড করেন ৬৫ বছরের এই বৃদ্ধ কৃষক। গত বছর ১৩ সেপ্টেম্বর তিনি মেঘনা নদীতে ১৮ কিলোমিটার সাঁতরে ৪ঘন্টা সময় নেন। তাকে উৎসাহ দিতে স্থানীয়রা ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার প্রদান করেন। যার পুরো টাকা মসজিদের নির্মাণ কাজে ব্যয় করেন। অসম্পূর্ণ কাজ সমাপ্ত করতে ধনী দানশীল ব্যাক্তিদের দৃষ্টি কামনা করে সহযোগিতা চেয়ে আজও এমন একটি সাঁতারে অংশ নেন।
শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিন সাঁতার কাটি বলে এখনো সুস্থ জীবন যাপন করে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় মসজিদ নির্মাণের ইচ্ছা ছিল। নিজ গ্রামে হাজি বাড়ি জামে মসজিদ নির্মাণে জমিসহ বিভিন্ন সহযোগিতা করেছি। গতবছরের সাঁতারের সংগ্রহীত অর্থ দান করেছি। আরও ৪ টন রড সহ আনুষঙ্গিক কাজ অসমাপ্ত।আজকের প্রাপ্ত পুরো টাকাটা মসজিদ নির্মাণকাজে ব্যয় করব। এ কাজে দানশীল ব্যাক্তিদের সহযোগিতা চাই। আমি নিজ উদ্যোগে এই কাজ করে যাচ্ছি। সাঁতারে সরকারি বা বেসরকারি সহযোগিতা পেলে আরও বহুদূর এগিয়ে যেতে পারব।'
সম্পাদকঃ শেখ আব্দুল জলিল, প্রধান সম্পাদকঃ শেখ শহীদ কায়সার, ব্যবস্থাপনা সম্পাদকঃ উম্মে দিল আফসানা
সহ সম্পাদকঃ জান্নাতুল ফেরদাউস, বার্তা সম্পাদকঃ মোঃ আশিকুর রহমান সৈকত।
Office: Holding #535/1/A, Flat No:4B. South Monipur, Mirpur -1216 Dhaka, Bangladesh.
E-mail: narsingdipost@gmail.com Editor: 01736065708
Copyright © 2024 Narsingdi Post. All rights reserved.