শেখ আব্দুল জলিল—-
দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করার কারনে বেলাবরের অধিকাংশ গ্রামীণ রাস্তার অবস্থা নাজুক হয়ে পড়েছে। এছাড়াও কিছু কিছু রাস্তা পাকা না করার কারনে কাদাপানি ও ছোট বড় অসংখ্য গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে চলাচলের। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে উপজেলার দুটি হাট বাজারে প্রবেশের রাস্তা। জানা গেছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা বছরখানেক আগে ওইসব এলাকায় পরিদর্শন করে বেহাল রাস্তার মাপজোক নেন। তারপর সংস্কার ও পাকাকরণের আশ্বাস দেন। আর এই আশ্বাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে বছরের পর বছর। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ফলে চরম দূভোর্গ পোহাচ্ছে জনগণ।
বিভিন্ন এলাকার মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে,্বর্তমান সরকারের উপজেলার বেশকিছু সড়কই সংস্কার ও পাকাকরণ করা হয়েছে। তবে গ্রামীণ কিছু রাস্তার অবস্থা অত্যান্ত বেহাল। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করার কারনে এসব রাস্তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এ উপজেলার বেলাব,আমলাব ও নারায়নপুরের তিনটি রাস্তার। এই তিনটি রাস্তা বাজারে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রবেশের প্রধান রাস্তা।
সরেজমিনে উপজেলার আমলাব বাজারে গিয়ে দেখা যায়,কাঠের ফার্ণিসার ও কাঠের বাজারের জন্য বিখ্যাত এই বাজারের প্রবেশের প্রধান সড়কের অবস্থা অত্যান্ত নাজুক। হাটু সমান কাদা পানি,ছোট বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে মাটির এই রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে দীর্ঘদিন ধরে। এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন একাধিক মালবাহী ট্রাক,রিক্সা,ট্রলী বাজারে কাঠের ফার্ণিসার আনা নেওয়া করে। প্রায় দুই আড়াইশ ফুটের এই রাস্তাটি বছর দেড়েক আগে তৎকালীন উপজেলা এলজিইডি কর্মকর্তা মোঃ আরিফুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা এসে মাপজোক করে নেন। পরে কেটে গেছে দীর্ঘদিন। কিন্তু রাস্তাটি আর পাকাকরণ অথবা সংস্কার কিছুই হয়নি। ফলে কমেনি জনদূর্ভোগও।
জনবহুল আরেকটি রাস্তা নারায়নপুর বাজারের। নারায়নপুর সিএনজি ষ্ট্যান্ড হতে চাউলপট্রি ও কলেজ হয়ে খেলার মাঠ পর্যন্ত সবসময়ই কদমাক্ত থাকে। এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন বাজারের শতশত মানুষ ও য়ানবহন চলাচল করে। আসা যাওয়া করে নারায়নপুর রাবেয়া মহাবিদ্যালয় ও নারায়নপুর সরাফতউল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষাথর্ী। সামান্য বৃষ্টি হলেই এ রাস্তায় পানি জমে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। এ রাস্তাটিও বছর খানের আগে বেলাব উপজেলার বর্তমান ইউএনও পরিদর্শন করে জলাবদ্ধতা নিরসনে রাস্তার দুই পাশে ড্রেনের ব্যবস্থা করে দিবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু আশ্বাস পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। রাস্তাটি সংস্কার কিংবা দুই পাশের ড্রেনের ব্যবস্থা কিছুই হয়নি।
এছাড়াও নারায়নপুর ইউনিয়নের হোসেননগর কুড়ের পাড় থেকে সাংবাদিক আলমগীর পাঠানের বাড়ির উপর দিয়ে কান্দাপাঁড়া দিয়ে হোসেননগর পাইলট স্কুল পর্যন্ত রাস্তাটির বেহাল দশা দীর্ঘদিন ধরে। জনবহুল এ রাস্তা দিয়ে স্কুল কলেজের শিক্ষাথর্ীর পাশাপাশি প্রতিদিনই সবজি অধ্যুষিত এলাকা হোসেননগরের শতশত সবজি চাষী ভ্যান,ট্রলিতে করে সবজি নিয়ে নারায়নপুর ও বারৈচা বাজারের আসা যাওয়া করে। একই ইউনিয়নের ভাটেরচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে আসামপাঁড়া হয়ে রহিমেরকান্দি গ্যাস লাইন পর্যন্ত রাস্তাটি কাঁচা পড়ে আছে কয়েক যুগ ধরে। অধ্যাবধি এ রাস্তাটি মেরামতের কোন উদ্যোগ নেয়নি কতর্ৃপক্ষ।
এছাড়াও বেলাব বাজারের পুরান থানা চত্তর,আমলাব বেলাব রাস্তা হতে বড়তলী মাটির রাস্তা,উজিলাব মোড় হতে উজিলাব সাইরা বাড়ির রাস্তা,মরজাল সড়ক হতে সেন্টু মাষ্টারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তাসহ একাধিক কাঁচা রাস্তাগুলো দীর্ঘদিনেও পাকা হয়নি।
আমলাব বাজারের বণিক সমিতির সভাপতি মিঞা মোহাম্ম্দ হেলিম বলেন,মেইন রোড হতে আমলাব বাজারে প্রবেশের রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরেই কাঁচা রয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতা ও কাদায় ভরে যায় এ রাস্তাটি। এ রাস্তা দিয়ে প্রদিনিই ট্রাক,ট্রলী,রিক্সা ভ্যান ঝুঁকি নিয়ে বাজারে মাল আনা নেওয়া করে। আমাদের দাবি অতি দ্রুত যেন এ রাস্তাটি পাকাকরণ করা হয়।
আমলাব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নূরুল হাসান ভূইয়া জানান,আমলাব বাজারের প্রবেশের প্রধান রাস্তাটির অবস্থা আসলেই অত্যান্ত নাজুক। আমি এ রাস্তাটি নিয়ে খুব শ্রীঘ্রই শিল্পমন্ত্রীকে অবগত করবো এবং রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা করবো।
উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামসুল হক ভূইয়া বলেন,নারায়নপুর বাজারের ৪০ ফিটের রাস্তাটির আমাদের লিস্টে আছে। এটা সংস্কার করা হবে। তবে আমলাব বাজারের রাস্তাটি যেহেতু কাঁচা তাই কাঁচা রাস্তার বরাদ্ধ আমাদের এখানে নেই।
বেলাব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আক্তার হোসেন শাহিন বলেন,সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে একটি দরখাস্ত দিলে আমি বিষয়টি দেখবো।
Leave a Reply