দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নরসিংদী জেলার সংসদীয় আসনের ৩৭ প্রার্থীর মধ্যে ২৭ জন প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। ৪৩ জন প্রার্থী আবেদন করলেও বিভিন্ন ধরনের অসঙ্গতি থাকায় ৫ জনের আবেদন বাতিল করে দেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।

আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী ও তাদের দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যতিত অন্য প্রায় সকল প্রার্থীরা জামানত হারিয়েছেন।

আইনে বলা হয়েছে মোট কাস্টিং ভোটের পাঁচ শতাংশের কম ভোট প্রার্থী পেলে তিনি জামানত হারাবেন। এই নিয়ম অনুযায়ী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ৩৭ জন প্রার্থীর মধ্যে ২৭ জন প্রার্থীই পাঁচ শতাংশের কম ভোট পেয়েছেন। ২৭ জন প্রার্থী কাস্টিং ভোটের এক শতাংশের কম পেয়েছেন।

 নরসিংদীতে জেলা প্রশাসনের তথ্যানুযায়ী গড়ে ৪১ শতাংশ ভোট কাস্টিং হয়েছে। সবচেয়ে কম ভোট পেয়েছেন রায়পুরা উপজেলার বিএনএফের প্রার্থী মো. বিটু মিয়া। সে ১৬৩ কেন্দ্রে ৭৫ টি ভোট পেয়েছেন।

সংশ্লিষ্ট দল বলছে, দলীয় প্রার্থীদের ক্ষেত্রে মোটাদাগে একটা বরাদ্দ পাওয়া যায় এবং সরকার থেকে রাজনৈতিক ফায়দা লুটানো যায়। যার জন্য ভোটের প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করে থাকেন।

নরসিংদী-১

ননরসিংদী নৌকার বিজয়ী প্রার্থী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হিরু ও জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান ব্যতীত বাকি ৬ জন প্রার্থী তাদের জামানত হারিয়েছেন। এ আসনে ৪৪১৪৩৬ জন ভোটারের মধ্যে ১৪৫৭১৩ টি ভোট কাস্টের মধ্যে বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী  ইকবাল হোসেন ভূইয়া ১৮৯ টি (০.১২ শতাংশ) জাতীয় পার্টির প্রার্থী ওমর ফারুক মিয়া ৭৫০ টি (০.৫১ শতাংশ), বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মো. ছবির মিয়া ২৭৩ টি (০.১৮ শতাংশ)  তৃনমূল বিএনপির মো. জলিল সরকার ১৪০ (০.০৯ শতাংশ), স্বতন্ত্রপ্রার্থী জাকারিয়া ১৪২ টি ( ০.০৯৭) এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির সাজাহান মিয়া ৪৭৭ টি  (০.৩০) ভোট পেয়েছেন।

নরসিংদী-২

নরসিংদী-২ (পলাশ) আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী ব্যতিত বাকি ২ প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। ৯০ টি কেন্দ্রে ২৬৯২৫৩ টি ভোটের মধ্যে ৯৩২৫৫ টি কাস্ট হয়েছে। এদের মধ্যে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এ.এন.এম রফিকুল ইসলাম সেলিম ৪৯১৫ টি (৫.২৭) স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিজয়ী প্রার্থীর স্ত্রী আফরোজা সুলতানা ৬২৪ টি (০.৬৬) এবং আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. মাসুম বিল্লাহ ৭৭৫ টি (০.৮৩) ভোট পেয়েছেন।

নরসিংদী-৩

নরসিংদী-৩ (শিবপুর) আসনে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী ফজলে রাব্বি খানকে পরাজিত করে নির্বাচিত হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মোল্লা।  এ আসনে ৮ জন প্রার্থীর মধ্যে ৬ জন জামানত হারিয়েছেন। ২৬৩৭২৩ টি ভোটের মধ্যে ১০৩২৪০ টি ভোট কাস্ট হয়েছে। এদের মধ্যে জাতীয় পার্টির প্রার্থী এএসএম জাহাঙ্গীর পাঠান পেয়েছেন ১৮৯, (০.১৮), ন্যাশনাল পিপলস পার্টি ডা.মো. আলতাফ হোসেন ১৮০ (০.১৭) বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মিরানা জাফরিন চৌধুরী ৩৪৮ টি ( ০.৩৩), ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী মোহাম্মদ নুরুজ্জামান ৩৩১ (০.৩২) গণফোরামের মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান ১১২ (০.১০), তৃণমূল বিএনপির সুশান্ত চন্দ্র বর্মণ ১৮৬ টি (০.১৮) ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন।

নরসিংদী-৪

নরসিংদী-৪ (বেলাব-মনোহরদী) আসনে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী  সাইফুল ইসলাম বীরু ব্যতিত অন্য দুই প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন। এ আসনে ৪০২৬১০ টি ভোটের মধ্যে ১৪৯৮০৩ টি ভোট কাস্ট হয়েছে। এদের মধ্যে জাতীয় পার্টির মো. কামাল উদ্দিন ৯৫২ টি  (০.৬৩)এবং বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের প্রার্থী এমদাদুল হক (ভুলন) ১৮৪ টি ( (০.১২) ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন।

নরসিংদী-৫

নরসিংদী-৫ (রায়পুরা) আসনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী ও সাবেক মন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু ও স্বতন্ত্রপ্রার্থী উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান চৌধুরী ব্যতিত বাকি ৭ জন প্রার্থী জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে। ৪৫৫২৯৭ ভোটের মধ্যে ১৬৩ টি কেন্দ্রে ১৭৯২৮৪ টি ভোট কাস্ট হয়। ইসলামী ঐক্যজোটের মুফতি আব্দুল কাদের মোল্লা ১৩৩৭ (০.৭৪), বাংলাদেশ কংগ্রেসের মমতাজ মহল ১৫৫ (০.০৮৬), গণফ্রন্টের মো. নাজমুল হক সিকদার ১০১ (০.০৫৬), বিএনএফের মো. বিটু মিয়া ৭৫ (০.০৪১)  জাসদের মাহফুজুর রহমান ৬৯০ (০.৩৮) জাতীয় পার্টি মো. শহীদুল ইসলাম ৭৫৬ (০.৪২), স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. সোলায়মান সোলায়মান খন্দমাল ৩৩৭ টি (০.১৮) শতাংশ ভোট পেয়ে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।