আজ ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মহেশখালীর পাহাড়ে অস্ত্রের কারখানা; সরঞ্জাম সহ ৩ কারিগর আটক

মহেশখালী প্রতিনিধিঃ 

গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর হোয়ানক ইউনিয়নের পূর্ব পুইরছড়া খঞ্জনীর বাপেরঘোনা পাহাড়ী এলাকায় অস্ত্র তৈরীর কারখানার সন্ধান পেলে কারখানায় অভিযান পরিচালনা করে অস্ত্র তৈরী ও অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ের সাথে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১৫। এসময় অস্ত্র ও বিপুল পরিমাণ অস্ত্র তৈরীর সরঞ্জামাদি উদ্ধার করেন।

সাম্প্রতিক সময়ে মহেশখালী উপজেলার বিভিন্ন দূর্গম পাহাড়ি এলাকায় অস্ত্র তৈরির কারখানা হতে কক্সবাজারের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের নিকট অস্ত্র সরবরাহ হয় বলে র‍্যাবের আভিযানিক দল তথ্য পায়। এরই প্রেক্ষিতে গোপন তথ্যের মাধ্যমে উক্ত অস্ত্র তৈরির কারখানা সনাক্তকরণ ও অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার লক্ষ্যে ব্যাপক গোয়েন্দা কার্যক্রম ও নজরদারি শুরু করে র‍্যাব-১৫।

১৬ মার্চ (শনিবার) ভোর ৬টার সময় র‍্যাব-১৫, কক্সবাজার এর সিপিএসসি ক্যাম্পের একটি চৌকস আভিযানিক দল মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের পূর্ব পুইরছড়াস্থ খঞ্জনির বাপের ঘোনা পাহাড়ি ঢাল এলাকায় অবৈধ অস্ত্র ও অস্ত্র তৈরী সরঞ্জামাদি উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে। এবং সেখানে অভিযান পরিচালনার সময় একটি অস্ত্র তৈরীর কারখানার সন্ধান পায়। র‍্যাবের অভিযানের বিষয়টি বুঝতে পেরে অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ীরা দুর্গম পাহাড়ের এদিক-ওদিক দৌড়ে পালিয়ে যেতে থাকে।

র‍্যাব -১৫ এর অভিযানিক দল বলেন, পলায়নকালে ধাওয়া করে অবৈধ অস্ত্র তৈরী, কেনা-বেচার সাথে জড়িত চক্রের তিনজনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। অস্ত্র তৈরীর কারখানার অন্যতম কারিগর বাদশা মিয়া কৌশলে দূর্গম পাহাড়ী এলাকায় পালিয়ে যায়। অস্ত্রের কারখানা হতে দুটি দেশীয় তৈরী ওয়ান শুটার গান এবং অস্ত্র তৈরীর সরঞ্জামাদির মধ্যে উল্লেখযোগ্য লোহার তৈরী ড্রিল মেশিন, হাতুড়ী, করাত, চারটি লোহার পাইপ, দুটি লোহার ব্যারেল, হেক্সো ব্লেড, দুটি লোহা কাটার ব্লেড, ঘাটটি ওয়াশার, দুটি পাঞ্চিং রড, দুটি বড় নাট, রেঞ্চ, স্টীল সীড, তিনটি লোহার অংশ ও লোহার ব্রাশসহ অস্ত্র তৈরীর আনুষাঙ্গিক ছোট-বড় ৫০টি অস্ত্র তৈরীর বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতার কৃতরা হলেন- ফকির মোহাম্মদের ছেলে
ফরিদুল আলম (৫৪), ফরিদুল আলমের ছেলে
জিসাদ সোনা মিয়া (২২) ও বাহিম (২০)।

র‍্যাব-১৫ তাদের জিজ্ঞাসা করলে, গ্রেফতারকৃতরা উক্ত অস্ত্র তৈরীর কারখানার অন্যতম কারিগর বাদশা মিয়া বলে জানায়। তারা মহেশখালী থানাধীন হোয়ানক ইউনিয়নের পূর্ব পুইরছড়া খঞ্জনীর বাপের ঘোনা পাহাড়ে অবস্থান করে দীর্ঘদিন ধরে গোপনে অস্ত্র তৈরী ও অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা পরিচালনাসহ ডাকাতি, অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায় এবং মাদকাসহ নানাবিধ অপরাধ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল বলে জানায়। এছাড়াও দুর্গম পাহাড়ী এলাকা হওয়ার সুবাদে সেখানে গড়ে তুলে অস্ত্র তৈরীর কারখানা। পলাতক ও গ্রেফতারকৃতরা দীর্ঘদিন যাবৎ বর্ণিত কারখানায় কক্সবাজার শহরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরীর প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সংগ্রহ করে দেশীয় বিভিন্ন ধরণের অস্ত্র তৈরী করতো। পরবর্তীতে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে এ সফল দেশীয় তৈরী অস্ত্র কক্সবাজার শহর, রোহিঙ্গা ক্যাম্প, সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসার নিকট এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অপরাধীদের নিকট উচ্চ মূল্যে বিক্রয় করে থাকে মর্মে স্বীকারও করে।

উদ্ধারকৃত আলামতসহ পলাতক ও গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নিমিত্তে মহেশখালী থানায় অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে বলে জানা র‍্যাব-১৫ এর কর্মকর্তা।

এ ক্যাটাগরির আরো নিউজ...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এ ক্যাটাগরির আরো নিউজ...