সাকিব আলম মামুন
লংগদু, (রাঙামাটি) প্রতিনিধিঃ
রাঙামাটির লংগদুতে পাকুয়াখালী ৩৫ বাঙালী কাঠুরিয়া গণহত্যার বিচারের দাবীতে শোক র্যালী, দোয়া মোনাজাত ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি।
শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে লংগদু উপজেলা পরিষদ প্রান্ত থেকে শোক র্যালী বের হয়ে প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কাঠুরিয়াদের গণ কবরের সামনে এসে কবর জিয়ারত ও দোয়া মোনাজাতে শরীক হয়। এসময় দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন হাফেজ মাওলানা ওবায়দুল্লাহ আহাদ।
পরবর্তীতে শোকসভাটি উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরী হলরুমে ছাত্র পরিষদ লংগদু উপজেলার আহ্বায়ক আবদুল্লাহ আল মোমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির চেয়ারম্যান জনাব কাজী মজিবুর রহমান।
এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি জনাব ইঞ্জিনিয়ার শাহাদাৎ ফরাজি সাকিব, নাগরিক পরিষদের মহাসচিব আলমগীর কবির, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন, শেখ আহমেদ রাজু, বাঘাইছড়ি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম, মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, শেখ আহমেদ রাজু, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল মজিদ, মোর্শেদা আক্তার, পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল চৌধুরী অপু সহ পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ ও ছাত্র পরিষদের নেতৃবৃন্দ।
এসময় বক্তারা বলেন, পাকুয়াখালী গণহত্যা সহ পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল হত্যাকান্ডের বিচার করতে হবে। পাকুয়াখালী গণহত্যায় নিহতদের পরিবারকে পূর্ণবাসন করা, নিহতদের পরিবার থেকে যোগ্যতানুযায়ী চাকরির দেওয়া, পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সকল প্রকার অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা, পার্বত্য বাঙালীদের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করাসহ ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনে সমান সংখ্যক সদস্য নিয়োগ করে ভূমি কমিশন পূর্ণঘঠন করার দাবী জানান।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালের ৯ সেপ্টেম্বর সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন তৎকালীন শান্তিবাহিনী নামক সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা রাঙামাটি জেলার লংগদু উপজেলার ৩৫ নিরীহ বাঙালী কাঠুরিয়াকে বাঘাইছড়ি ও লংগদুর মধ্যবর্তী এলাকা গহীন অরণ্য পাকুয়াখালী নামক স্থানে আলোচনা সভা করবে বলে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যাকান্ড চালিয়ে জঘন্যতম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল। সে সময় ইউনুছ মিয়া নামে এক বাঙালী পালিয়ে আসতে পারায় এই হত্যাকান্ডের খবর জানা সম্ভব হয়েছিল এবং সেই কাঠুরিয়াদের লাশ উদ্ধার করা সক্ষম হয়েছিল। সেই থেকে পার্বত্য বাঙালীরা এই তারিখটিকে কাঠুরিয়া হত্যাকান্ড দিবস বা “পাকুয়াখালী ট্রাজেডি” হিসেবে পালন করে এবং এই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানিয়ে আসছে বাঙালীরা।
পার্বত্য চট্টগ্রামে এত বড় হত্যাকান্ডের ২৬ বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও কারো কোনো বিচার না হওয়ায় হতাশাগ্রস্ত পার্বত্য বাঙালীরা।
Leave a Reply