শাকূর মাহমুদ (কবি, নাট্যকার ও উপন্যাসিক)
ধ্যাত! শালার ডাক্তার! ভালো মতন একবার দেখলোও না
বাবাকে রুমের ভেতর ঢুকাইয়া দিয়া বাইরে ছিলাম আমি আর মা।
রুম ভর্তি একগাদা ওষুধ কোম্পানির লোক প্যাড কলম হাতে
অনেক রোগী বাইরে দাঁড়াইয়া কষ্টে চিল্লায় আর কাঁদে ; কী বা আসে যায় তাতে!
ডাক্তার মশাই কানে মোবাইল লাগাইয়া ব্যস্ত কথা কইতে
ইশারায় আমার বাবারে কয় সামনের টোলে বইতে ।
বাবা আমার ভয়ে ভয়ে টোলে বইসা ডাক্তারের দিকে তাকায়
বামপাশ থেইকা বালপাকনা কম্পাউন্ডার ‘কি হইসে’ আমার বাবারে শুধায় !
বাবা আমার কাঁপো কাঁপো কন্ঠে সমস্যা লাগলো কইতে
ওপাশ থেকে ততক্ষণে আরেকটা রোগী বাবার টোলের ওপর চায় বইতে-
ডাক্তার মশাই সমস্যার কথা শেষ হওয়ার আগেই একগাদা পরীক্ষা দিলো,
অসহায় বাবা ফ্যাল-ফ্যাল তাকাইয়া প্রেসক্রিপশন হাতে বিদায় নিলো ।
এত্তগুলা টেস্ট! কোথায় করাইবে? হাসপাতালে বিরাট বড় লাইন
ভাবতে ভাবতে যখন অস্থির, তখন দেবদূত হয়ে আসলো দালাল গাইন !
অনেক কিছু বুঝাইয়া শুনাইয়া নিয়া গেলো রাস্তার ওপাশের ক্লিনিকে
পকেট আমার খালি হইলো, আর ঢের সময় পার হইলো এদিকে ।
হম্পিদম্পি করিয়া বাবাকে সঙ্গে নিয়া হাসপাতালে ছুটে যাই
গিয়ে দেখি ততক্ষণে ডাক্তার মশাই হাসপাতালে নাই,
রুম কম্পাউন্ডার চোখ কটমটাইয়া কইলো আগামীকাল আসতে
বিকালে চেম্বারে আসো ওষুধ কোম্পানির লোক কইলো হাসতে হাসতে-
আমি আর বাবা চোখাচোখি শেষে আজকের মতো বাসায় চলিলাম
পর দিন আবার সকাল সকাল হাসপাতালে ছুটে আসিলাম ।
গ্যাটম্যান শুধায়, ‘স্যার নাই’ স্যার আইজকা ছুটিতে গেসে!’
বাসার দিকে আবার ছুটিলাম বাবা- ছেলের চোখাচোখি শেষে।
তৃতীয় দিনও ডাক্তার নাই – ওনি নাকি ট্রেনিংয়ে গেসে
ওই দিন ও বাসায় ফিরিলাম পরাজিতের বেশে!
চতুর্থ দিন আর হাসপাতালে যাইনি গিয়েছিলাম চেম্বারে
এই ভাবেই বাবার চিকিৎসা হয়- ঘুরে কসাইখানার দ্বারে।
Leave a Reply